ফিরে চলা...

অন্ধোকার ঘরে রক্তাক্ত Whiskyর গ্লাসটি,
জমাটে রক্তের রঙ কী  অদ্ভূত কালো,
জানলা ভেদ করে সূর্যস্ত্রের বার্তা বয়ে গোমট হাওয়ার আনাগোনা,
মৃতদেহ চেয়ার বন্দি৷
দেওয়ালবিদ্ধ বেউনেটের শেষ গুলি,
Beethoven এর মৃত্যু সঙ্গীত দম বন্ধ করা,
জুতোর দাগের দাবি কেবল,
আত্ম্যহত্যা চাই,
নীল চোখে পৃথিবী চাই৷
ছায়ায় চাঁদের বুড়ি মেলে,
Ceiling এ পক্ষিরাজ ঘোড়া,
বিষাক্ত প্রলভনে শৈশব দিশাহারা৷
মৃত্যু যাত্রা বন্দুকের নলে স্বপ্ন খোঁজে,
শৈশব না ফিরুক,
শৈশবে একদিন ঠিক ফিরবো আমি৷৷

চে-ক্যাস্ত্রো

A verse in fire,
Death crawled through l`s,
A dead poet,
A society in forgotten red...
                              সমাজ আগুনের ডগায়,পোড়া গন্ধ পাচ্ছি৷ মৃত্যুচ্ছন্ন Democracy, আর আত্মঘাতী সাম্য৷ মিল পাচ্ছো?
মিল পাচ্ছো সেই ঘর খেঁদানো বেদো ছেলেটির সাথে?
আমি পাচ্ছি৷
সে আগে পয়সা চুরি করে শখ মেটাতো নিজের, তবে এখন সে জীবিকা চালায়৷ সমাজেরও একই অবস্থা৷
জানো আমি আগুনের আঁচে ছিন্নবস্ত্রে প্রতি মুহুর্তে রাস্তার একটি পাগলীকে পুড়ে যেতে দেখেছি৷
আমি অদূর ভবিষ্যতে সংগ্রামের বার্তা পেয়েছি৷
-Long Live July Revolution.
আমি চে কে দেখেছি ফুটপাতে শুয়ে কাতড়াতে৷ আমি চে কে দেখেছি জীবন পেতে৷
আমি মঞ্চে পেয়েছি ক্যাস্ত্রোকে৷ দেখেছি বেসামাল যুগলবন্দিতে টালমাটাল হতে বিশ্ব রাজনীতিকে৷
ভয় নেই,
এবার চে-ক্যাস্ত্রো ইচ্ছামৃত্যু বর প্রাপ্ত৷
তারা যে জীবিত সংগ্রামের আঁতুরঘরে, তারা জীবিত নতুনের ভবিষ্যতে৷
তারা জীবিত নগ্ন বাচ্চাটির পেটের খিদেতে৷
A Reformed Communism is what a society deserves.
প্রাপ্যের দিকে না এগিয়ে সমাজ ধ্বংসের দিকে এগিয়েছে যেখানে শ্রেণী ভাগ পর্বত আকার ধারণ করেছে৷
এখানেই কবি কেঁদেছেন৷
এখানেই হারিয়েছেন শব্দ৷

Pages rolled down the streets,
Wet by rain, Wretched by pain.
The poet still lay dead,
Blood all over.
A forgotten society in red.
               শব্দের খেলা তবু থামেনি৷ হোক না কবির মৃত্যু, যাক না পাতাগুলো ধুয়ে মুছে৷
ভাবনা চিন্তায় কি এক মুঠো তফাত এসেছে?
ভাবনা চিন্তা যে বেইমান না৷
অবাক হয়তো যে কবি কই?
If Revolution is literature , Che Guevera And Fidel Castro were poets.

বিশ্ব দরবারে এ সমাজ বাণিজ্য চালাতে পারে,
বিশ্ব দরবারে একটি নারী মন খুলে বাঁচতে চাইলে সেই সমাজেরই চোখ রাঙানি৷একটি ছোট্ট শিশুর কান্না অবহেলিত,গরীবদের কষ্ট G.D.P তে মাপে এ সমাজ৷পাল্টা আক্রমণে মেতে ওঠে তখন সংগ্রাম,
সংগ্রাম দু হাতা ভাতের,
সংগ্রাম দুটো শরীর ঢাকবার বস্ত্রের৷
সংগ্রাম জীবিত থাকবার৷
হঠাৎ কোথাও Capitalism কে ছাই হতে দেখছি৷

চিন্তা যতই নিদ্রাছন্ন হোক না কেন, ভাবনাগুলো খাঁটি,
ঘুম ভেঙ্গে মাথা নিচু করতে হলেও,
সমাজের ঘুম ভাঙবার অপেক্ষায় রইলাম৷
আমার স্বপ্ন ভাঙা চোখে তোমার মাথা হেঁট করা আত্মসমর্পণ দেখার অপেক্ষায় রইলাম৷











মঞ্চ দর্শন....


মনের কুঁড়ি থেকে ফুটে ওঠা যন্ত্রণা নিয়মিত পরাস্ত হয় এ জীবনের মঞ্চে৷ ব্যাকস্টেজের জীবিকা যদি তুলে ধরি,তবে সেটিকে অনায়াসে জীবন বললে চালিয়ে দেওয়া যেতে পারে৷
মঞ্চে যে শুধু নাটকের জন্ম ঘটে,সেখানে জীবনের ঠাঁই নেই৷
ছেঁড়া জামা,এলো মেলো চুলে কোন ধর্ষিতাকে মঞ্চে রক্ত মাখাতে দেখেছো?
পুতুলের আদলে তার মুখ খানি আর তাতে আঁচড় কেটেছে শরীরখেকো পুরুষতন্ত্রের নজর৷ রঙ্গমঞ্চে কেবল ঠাঁই পাবে তার চিৎকার,তার কান্নার তীব্রতা৷ বাকি সব রয়ে যাবে ব্যাকস্টেজের গ্রীন রুমের জামা কাপড়ে চাপা৷
মেয়েটির যে আরও কিছু বলার ছিল,
মেয়েটির যে সমাজের কাছে ক্ষমা চাওয়ার ছিল৷
হ্যাঁ ক্ষমা ই..
সে যে নারী রূপে জন্মেছে৷
মঞ্চ কিন্তু তাকে বলতে দেয়নি৷ মঞ্চ ধার ধারে না তোমার আমার, তবে তাও সমাজের পায়ের তলায় পিষছে এ মঞ্চ৷
-Revolution must go on.....
-"আঁতলামি হচ্ছে??"
1960 সালের বাংলা,
মঞ্চে স্থান পেয়েছিল অনাহারে মড়া শিশুর দল আর তাদের মায়ের চিৎকার৷ কতোটা সফল তুমি?
হ্যাঁ তুমিই...
তোমায় বলছি নাটক,
পেরেছ থিয়েটারের মঞ্চ থেকে জীবনের গতিবিধিতে ফেরাতে একটিও শিশুকে?
আর
সেই নকশাল যুবক যার রক্তের দাম মেটানোর ক্ষমতা তোমার নেই... তার যে এখন শুধু রক্ত মাখা কাশি হয়৷ তোমার স্পর্শে থেকে সে কত আন্দোলন চালিয়েছে,তাকে জীবনের আন্দোলনে পরাস্ত করে তুমিই বিজয়ী৷
সমাজের খলনায়করূপে মঞ্চে প্রবেশ নয় ঘটল,তবে সেটি কতটা ?
-Revolutionist may die, but the Revolution must go on.....
এ জীবন যুদ্ধের খেলায় মন্ত্রীর ঘরে সবসময় বসে সমাজ৷ আজও লড়াই তারই সাথে , তবে তার যে রঙ বদল ঘটে৷ কখনো আবেগের রূপে কখনো ধর্মের রূপে কখনো আবার বদলের রূপে সে রঙ বদলায়৷

ইতিবাচক হতে চাই,তবে স্কোপের অভাব৷ চারিদিকে যে যুদ্ধের আগমনী৷ ঢং ঢং করে বাজচ্ছে সমাজের চেকমেটের ঘন্টা৷ রক্তাক্ত মঞ্চে একা পড়ে রাজনৈতিক কলরব, বাচ্চাটির খাবার কিন্তু জোটেনি৷ সেখানে এক দু ফোঁটা অকাল মেঘের চু কিত কিত, কথায় আছে না?
"আশায় ঘর বাঁধে চাষা"
মঞ্চে আজ অভিশাপের আগুন, অভিশাপ প্রাক্তনদের অট্টহাসির৷ তারা রক্তাক্ত কণ্ঠ কিসের বেশ প্রতিবাদে মেতে৷ ছাই হয়ে হাওয়ায় মিশছে Cultural Globalization৷
"তোমার আমার রক্তের রঙ এক হতে পারে তবে ভাবনা চিন্তার নয়৷", ভেসে  আসছে দূর থেকে৷
তবে কি Globalization এর concept মিথ্যা?
মিথ্যা হওয়াটা অবধারিত নয় কি?
ক্ষুদার্ত পেটে যে ভাবনা জন্ম নেয় তা কখনো Red Wine এর মাদকতায় হাত তুলে দাঁড়ায় না৷
মঞ্চ চির অমর থাকলেও ভাবনার কবরস্থানে রোজ খুঁড়তে হচ্ছে নতুন কবর৷

-স্টেজ
-লাইটস
-জীবন
-ইতি
"
Two roads diverged in a wood, and I —
I took the one less traveled by,
And that has made all the difference.",মঞ্চ চিৎকার করে বললে সব শেষে...

Independence And Freedom

Mid 1900s, at the backstage of a Theatre, Satyen stood infront of the mirror. Being dressed in vintage hunter’s costume, he saw the revolutionalist inside him for the first time. The darkness revealed the turmoil of false Independence. The starstud stage lighting symbolized the revolution and the upcoming Reformation. Amidst the fire kissed surrounding, he stood burning .For to light the future of the reformation, revolutionists should burn and so did he.                                                                     He being a native of East Bengal is a mere refugee lost in the colors of the Independent India.”Independence, huh?, he cried. He saw Independence doomed in the hands of power and Authority for he like many others saw thousands dying of starvation. The roads, the fields, the rivers and Nature in hunger of Human life thrive mass suicide era in Bengal. A state where Sun rises with the death of a young boy who is yet to dream and sets with the last breathe of a man who lost to poverty.                                                                           Amidst the revolution and reformation, was born a generation of calamity, disaster, hunger and fight for livelihood. Satyen, the boy who grew up to be a man with the bloodsheds of his family. He grew up with the stage being set around the merciless killing of farmers and women. He fed himself with the series of suicide made by thousand of mothers for they failed to nourish their children.                                                                   Satyen entered the stage, sounds of applause buzzed in from every corner of the theatre. Only Satyen knew, he never longed or desired to be a theatre worker.What he wanted was to be a part of the Revolution through his work, but he failed. Never being judged by his depth, he was a mere piece of entertainment to the audience. After the play was over, he took his payment and departed from the theatre. Little knew the theatre that the man departed for the last time, little knew the audience that they witnessed him for the final time.                                                                   Back home, under the dimmed light and blurred vision, he saw a new era.  He saw an era of enrichment, he saw an era of true independence where people cherish and love to live. He took out a bottle from his bag and kept it just beside him on his reading table and then opened his diary.He wrote,                     
"For life and death complement each other,
So do Independence and Revolution.
For here a river bank corrodes,
Somewhere a new bank originates.
For somewhere a revolutionist dies,
Revolution takes a new turn.
Every bank corrodes for the enlargement of the river,
And
Every revolutionist dies for the enrichment of the Revolution.”
 
The pen stopped, tears dropped on the pages of the diary and there he opened the bottle and drank it in one go.

The label on the bottle “Poison”

Independence laughed another time, Freedom and Revolution cried for the last time.

জোকার...


"সেবার শহরে দুর্গাপুজোর আগে সার্কাস এসেছিল৷ শহর বলতে নামেই শহর৷ দু চারটে পাকা সড়ক আর ল্যাম্প পোস্টের আলো৷ পুজোতে এখানে সেরকম কিছু হয়না, শুধু রামলালবাবুর বাড়ির পুজো৷ তবে সেবার সার্কাসটার জন্য পূজোর ছুটিটা বেশ অন্য আকৃতি ধারণ করেছিল৷
দা কমেডি সার্কাস"......
সে একটু থেমে..ডায়রির ভিতর থেকে একটা পেপার কাটিং বের করে আবার বললে,"হুম...এটাই ছিল নাম৷"
বাবা!! আমি জোকারের গল্প শুনবো..সার্কাসের জোকার...তুমি তো সার্কাস আর শহরেই আটকে আছো...", বাচ্চা মেয়েটি বললে...
" সেবার সার্কাসটার প্রধান আকর্ষণ ছিল সেটির জোকারের কান্ড কারখানা৷ গোটা শহরের লোক রোজ তার কান্ড কারখানা দেখে এতটা খুশি হতো যে তা বলবার জো নেই৷ নাকে বল নিয়ে নাচ করা,রিংয়ের মধ্যে উন্মাদনা,সহকর্মীদের জ্বালাতন করা,বিভিন্ন খেলা দেখানোতে সে পারদর্শী ছিল৷ সব দর্শকের খুব প্রিয় হয়ে উঠল সে৷ সারাদিন হেসে,লাফিয়ে- ঝাঁপিয়ে সে সকলে খুশির চাদরে মুড়ে রাখত৷
বাবার সেরকম ছুটি ছিল না পুজোয় সেবার৷ তাই জোকারটি কে দেখবার সৌভাগ্য ঘটল এক্কেবারে সার্কাসের অন্তিম দিনে৷ কত শুনেছি এর আগে তার কথা, মনটা কিছুতেই বাঁধ মানছিল না৷ এক কোণের সিটে বসে বসে দেখতে লাগলাম তার কান্ড কারখানা৷ চোখ দুটো যেন স্থির হয়ে রইল জোকারটির দিকে৷
তারপর হঠাৎ তার খেলা দেখানো শেষ, সে স্টেজের পিছনে চলে গেল৷ ওই কোণ থেকে স্টেজের পিছনের কিছুটা অংশ বেশ দেখা যাচ্ছিল৷ দেখলাম সে মুখ পরিষ্কার করে কি যেন বলছে একটি লোককে৷ লোকটি বোধহয় সার্কাসটির মালিক৷ দেখলাম মুখের রঙচঙের সাথে সব খুশি যেন ধুয়ে গিয়েছে তার৷ মনে হলো আচ্ছা এই কি সেই জোকার?...
জোকারটিকে নিয়ে মনে যথেষ্ট কৌতুহল জন্মেছিল৷ তাই,সার্কাস তাঁবু থেকে তার প্রস্থানের সাথে সাথে আমিও তার পিছু নিলাম৷ এগিয়ে যেতে লাগলাম আড়াল করে,যাতে সে না বোঝে যে তার পিছু নিয়েছি আমি৷ অবশেষে দেখলাম সে একটি হাসপাতালে প্রবেশ করছে৷ মন কিছুটা বাধ সাধলেও, তার পিছনে আমিও ঢুকলাম হাসপাতালে৷ দেখলাম সে ঢুকেই টাকা জমা দিচ্ছে কীসের,তারপরই,তার টাকাটা তাকে ফেরত দিয়ে দেওয়া হলো দেখলাম৷আর দেখলাম লোকটির মাথার ওপর আকাশ ভেঙ্গে পড়তে,যদিও কারণটা জানা হয়েছিল না তখনো৷
ঠিক মিলিয়ে উঠতে পাড়ছিলাম না স্টেজের ওপরের জোকারকে এই লোকটির সাথে৷ সে যে শুধু আনন্দ বিলিয়েছে আর এ যে কষ্ট-দুঃখের আধার৷ পাশে দিয়ে তখনই একটা ওয়ার্ডবয় যাচ্ছিল৷
ডেকে জিজ্ঞাসা করলাম তাকে আর তার উত্তরে হাত পা কেঁপে গিয়েছিল৷ জোকারটি তার মেয়েকে হারিয়েছে তখন যখন সে তার মেয়ের অপারেশনের টাকার জন্য গোটা শহরবাসীদের হাসিয়ে মনোরঞ্জন করছিল৷ তার মেয়ে বেডে "বাবা,বাবা" বলে ডেকেই মারা গিয়েছে৷ আসলে ব্রেন টিউমার ছিল যে, আর টাকা জোগাড় না হলে যে অপারেশন হয়না৷
বাচ্চাটির হাসির কোনো দাম ছিল না৷ বাচ্চাটির বাবার যে কোনো স্বপ্ন থাকতে নেই৷ তারা যে গরির,তাদের জন্ম যে তীক্ষ্ণতা সেবনের জন্যই৷....."
মেয়ের চোখে জল দেখলাম৷ তাকে গিয়ে জড়িয়ে ধরলাম৷ তারপর সে বললে,"ভগবান আছে বাবা?"... দিয়ে দৌড়ে নিচের ঘরে চলে গেল৷
হাতে সেই সার্কাসের কাগজটি নিয়ে ভাবলাম,"সত্যি বোধহয় ভগবান নেই... এ পৃথিবীর উল্টো পুরাণের ইতিহাস যে আজকের নয়৷ এখানে যে হাসি বিক্রি করে চোখের জল মেলে..."
আবার প্রশ্ন জাগল আজ," কী করে পেড়েছিলে সেদিন??
হে ঈশ্বর...
কী করে?

অসহিষ্ণুতা...

ভরদুপুরে রেল লাইনের ওপর পড়ে থাকা কালো ফ্রেমের একটি চশমা৷ কাঁচ দুটি ঘোলাটে হয়ে গিয়েছে ঐতিহাসিক স্তব্ধতার কারণে, প্রতিবাদের ভাষা যে আজ মেরুদণ্ডহীন৷ একটু এগিয়ে,পাথরের ওপর জমাট বাধা লাল রক্তের চাক, হয়তো এ রক্ত কোনো এক প্রতিবাদির দেহের অলংকার৷ তার দেহ থেকে চুঁইয়ে পড়া রক্ত কীসের বেশ জয়ধ্বনি বয়ে নিয়ে চলেছে৷ জয়ধ্বনি মানুষের বদলের, জয়ধ্বনি পালটা চোখ তুলে তাকানোর, জয়ধ্বনি রক্তের বিনিময় প্রাণ উৎসর্গের৷
             অত্যাচারির নাম যখন সমাজ হয়,তখন সংশোধনের পথে সব চাইতে বড়ো কাঁটা হয়ে দাড়ায় তার অধীনে থাকা মানুষ৷ বদল যে এ পৃথিবীতে কখনো রক্তের অপচয় ছাড়া সম্ভব হয়নি৷ প্রতিটি বদলের ইতিহাস যে মানুষের রক্তে লেখা,লেখা সহস্র মানবহৃদয়ের স্থগিত অশ্রুজলের মূল্যে৷
আচ্ছা সমাজ বলতে কাকে বোঝো?...
তোমার পরিবারের প্রিয়জনের শ্রাদ্ধে যারা পেট পুরে খেতে আসে নাকি যারা তোমার বিপদে তোমায় আড়চোখে অবগ্যা করে?
সমাজের গলায় যে শুধু শুনতে পাই ,"দাদা আর একটা মাছ দেবেন এখানে"  আর "এখন একটু তাড়া আছে".. এর থেকে সহজভাবে সমাজের বর্ণনা বোধহয় দেওয়া সম্ভব না৷
রক্তের চাকের দু হাত দূরেই পরে রয়েছে রক্তের মালিকের দেহ৷ উবুর হয়ে পরে রয়েছে নরদেহটি, পীঠে গুলিবিদ্ধ ক্ষত৷ পরনের সাদা ফতুয়ার রঙ বদল ঘটেছে৷ বদল ঘটেছে মৃত্যু লগ্নের৷ তার যে জন্মানোর অধিকারই ছিল না, তবু কেন এ জন্ম? এ পৃথিবী যে পরিবর্তন মানে না, মানে না সাম্যের তীক্ষ্ণতা৷ সাম্য যে লোকগাথা,সাম্য যে মিথ্যা ছলচাতুরি এ সমাজের ৷
সাম্য আজ মৃত, তার মৃতদেহের ভারে আজ ভারাক্রান্ত এই রেল লাইনে পড়ে থাকা মৃতদেহ৷
ছেলেটি যে দলিত, সাম্য তো ওদের জন্য নয়৷ সাম্য এ সমাজের অলংকার, হ্যাঁ অলংকারই বটে৷ বছরে দু একবার যেটি বের করে পড়া হয়ে৷ দলিতশ্রেনীর ক্ষমতা কোথায় এ সাম্য অলংকৃত সমাজের ভাগীদার হওয়ার, তারা যে কেবল উৎবাস্তু এ সমাজে৷ তবে সমাজের ন্যায় বড্ড কঠিন যে,তাই আজ সাম্যের হাতে খুন এ যুবক৷
তার দোষ??
হয়তো বা সে জোড় করে নিজের জায়গা বানাতে চেয়েছিল এ সমাজে৷ তার এ বেয়াদপি সমাজ কি মানতে পারে?...
ফলে শাস্তি পেতেই হলো তাকে৷
রেল লাইনে লুটিয়ে পরে থাকা গুলিবিদ্ধ যুবকটি একটা ছাত্র হতে পারে যাকে তার সমাজ মেনে নেয়নি তার জাতিগত কারনে,সে যে দলিতশ্রেণীর...নীচু জাত তার৷ সে কোনো মিছিলের মুখ হতে পারে যাকে সমাজ ছাড়েনি তার বিরুদ্ধে ঝান্ডা তোলার অপরাধে৷ সে কোনো ধর্ষিতার ভাই হতে পারত যাকে সমাজ বাঁচতে দেয়নি৷ আবার সে মৃত রহিত ভেমুলার ভাই হতে পারে যাকে হত্যা করতে সমাজের হাত কাঁপেনি একবারও৷ 
কুকুর শিয়ালে ছিঁড়ছে তার দেহটিকে, তার রক্তে পিপাসা মিটছে হিংস্রপ্রাণীদের ৷ আর তার মৃতুতে আবার স্বগর্ভে মাথা তুলে বাঁচছে এ সমাজ, আজ যে প্রতিবাদের হুংকার নেই৷
বিকেলের অস্তগামী সূর্যের আজ মাথানত এ সমাজের বর্বরতায়৷ অ্ল্প আলোতে ছেলেটির পাশে পরে থাকা ঝোলা থেকে উঁকি মাড়ছে একটি বইয়ের অংশ...
"Stride Toward Freedom"...

           
      

কাঁটাতার...

উত্তপ্ত পৃথিবীর বুকে একপ্রান্তে আজ শরৎ জাঁকিয়ে বসেছে৷ চারিদিক থেকে ভেসে আসছে ঢাকের শব্দ৷ বাতাসের ছন্দে উন্মাদিত কাশফুলের দল৷ দেবীর আগমন ঘটেছে এ প্রাণখন্ডে৷ নতুন জামা নতুন খুশির মাঝে কোথাও একটা লুকিয়ে চাপা রক্তাক্ত আঘাতের দল৷
এ আঘাত কাঁটাতারের বেড়ার,এ আঘাত গঙ্গা-সুবর্ণরেখার,এ আঘাত পদ্মার দুই কূলের৷ এ অকাল বোধন যে ঘরে ফেরার বেনামা উড়োচিঠি,এ শরৎ যে মিলনের আধার৷ এপার পদ্মার ঢাকের তাল ভেসে যায় ওপারে৷ তবু মানুষের আনাগোনা আজ নিষিদ্ধ, নিষিদ্ধ দু কূলের আন্তরিক মিলন৷ মহানগরীতে কোথাও আজ থিমের আদলে সজ্জিত বাঙালীর সবচেয়ে বিষাক্ত ক্ষত৷ ক্ষতটির বয়স বেড়েছে তবে এখনও দগদগ করে সে রাজনৈতিক আঘাতে৷
"ভাষার আদলে নতুন নামকরণ এ রাজ্যের, আজ এটা বাংলা", চায়ের দোকানে আওরাচ্ছে মানুষ এসব বুলি৷ দূরে পদ্মার চোখে জল,তার অন্য ছেলেটি যে অবহেলিত আজ৷
অবশেষে দেবীর বিদায়বেলায় আজ মূর্ছিত পদ্মার দুই সন্তান, দেবীর আগমনের অপেক্ষায় আবার কাটাতে হবে একটি বছর তাদের৷ পদ্মার দুই পারে আজ প্রতিমা বিসর্জনের তড়িঘড়ি, সজ্জিত দুই কূল আজ দেবীর বিদায়বেলার অন্তিম অনন্দের মূহুর্তে৷ এবার দেবীর বিদায়ের পালা, চারিদিকে " আসছে বছর আবার হবে" রব উঠেছে, দুই কূলই আজ মেতেছে সিঁদুরখেলায়, চোখের এককোণে শুধু আদ্রতার ছোঁয়া৷ মা যে আবার অপেক্ষায় বাঁচিয়ে রাখবে একটি বছর৷
তবে আজ পদ্মার চোখে অদ্ভুত এক তৃপ্তি,আজ যে দু কূলের মাটি মিলে যাবে তারই কোলে, আজ যে তার ই ছোঁয়ায় তার দুই সন্তান৷
হয়তো দু কূলের মায়েরও আজ পদ্মার তলে একে অপরকে দেখে এক ই প্রশ্ন," ভাগটা কিসের?"
আর কাশফুলের গন্ধ অতিক্রম করে ভেসে আসতে লাগল বাংলার একত্র গন্ধ, তবে শুধু লেখকের খাতায় আর কবিদের ছন্দে৷
কাঁটাতারের ওপারে আজও কতো মা অপেক্ষায় তার ছেলের ঘরে ফেরার৷ অতীতের কাছে প্রশ্ন রয়ে যাবে একটাই..
" ভাগটা কিসের ছিল? "
ধর্মের?
তাহলে সেটা ভিত্তিহীন৷
মানুষের আবেগ যে ধর্ম মানে না, আনন্দ যে পার্থিব সম্পদ, আর ধর্ম?
অপার্থিব৷

এ শরৎপার্বণে, কাঁটাতারের বেড়ার ক্ষতের বিসর্জন ঘটুক এ পদ্মার আঁচলে, বাংলা যে আজও অসম্পূর্ণ দেশভাগের যন্ত্রণায়৷

Symphony

Amidst the grey azure,
Beethoven Symphonies thundering aloud,
I saw my world fumbling over some broken guitar strings...

A sudden cupid breeze,
And there she came....
Walking down those shabby pages of my life....

Thou,
Being the best choir of my Bohemia..
Being the hardest tide on my heart's sand...
Came with the spring blossoming all over..

Me,
Broken by the past scratches ,
Wounded by the coarse ink of destiny,
Again stepped on the mirage of ecstasy...

A heart that still beats..
Smokes out dark fumes of burnt pages..
For thou set them on fire...

Dear Love,
A weak heart calls it The End...
The End of symphonized Hours....

Death seems laughing over life's rooftop...
My Life,
Its over again.....

বিদায়বেলা...

কে জেনো ডাকছে আমায়৷ গভীর রাত্রে,জীবন্ত মৃত্যু বরণে মেতে উঠেছে মন.হাসফাঁস করছে বেঁচে থাকার স্মৃতিরাশি৷ বিথোভেনের থার্ড সিমফোনির ছন্দে এগোচ্ছে এ মৃত্যুমুখী প্রাণ৷ শুরু টা বড্ড বিষাদগ্রস্ত,তবে প্রতিটি ঝনঝন শব্দে কীসের যেন সংকেত৷ সংকেত বোধহয় নতুনদের আগমনের,সমাজের বুক চিড়ে আজ উর্দ্ধগামী নতুনের দল৷ সহস্র যুগের ব্যথিতার কোলে বসে তীব্র গলার স্বরে কম্পিত সারা পৃথিবীর জীবন৷
                                  কে যেন আমায় ডাকছে.স্বর্গ মর্ত্য কিছু নেই যেখানে,যেখানে নেই ক্ষমতা আর জেহাদের লড়াই,আমার ডাক পড়েছে সেখানে৷ বিথোভেনের মৃত সুরগুলোতে কারা যেন গভীর আর্তনাদকে জন্ম দিচ্ছে৷  আমার মৃত্যুর যন্ত্রণা থেকে জন্ম নিক অজস্র নারী সন্তান৷ যে নারীরা জন্ম দেবে নতুন প্রজন্মের তরুণকে৷  বহু অত্যাচারিত আজ তারা মোমবাতি মিছিলের ভিড়ে৷ আজ আমার মৃত্যু-ঢ্যাঁড়াপেটানোর ছন্দে আবার দমন হোক অত্যাচারী  শ্রেণি৷
          অবশেষে এসে পড়লে মৃত্যু? একটু দাঁড়াবে? এ অনন্ত জীবন ভরে দেখেছি কতো স্বপ্ন, বেঁধেছি কত আশার ঘর৷ সব যে আজ ভঙ্গুর এ এগিয়ে চলার মাঝে৷ কিছু স্বপ্নকে জলাঞ্জলি দিয়েছিলাম সুবর্ণরেখার তীরে,আমরা ঘর ছেড়ে রিফিউজি পদবির আশ্রয় নিয়েছিল৷  কত ব্যথা আজ এ বুকে আটকে.মুক্তি দেব আজ সব কিছুকে,আর ক্ষণিকের অপেক্ষা৷
হে পৃথিবী শুনতে পাচ্ছ?
আজ এ অন্তিম সাঁঝবেলায় তোমার কাছে কিছু প্রশ্ন রেখে গেলাম...
আচ্ছা কিসের এ ধর্ম,কিসের এ দেশপ্রেম,কিসের এ দেশভাগ??...
সব যে মিথ্যা এগুলো ,তুমি বোঝ না?
আমার মত তোমার এ সংসার ছেড়ে চলে যাবে কত মনীষির দল৷ তাহলে কেন এ মিথ্যাচার?
কিসের দেশ? কিসের দেশ ভাগ?কিসের এত হিংস্রতা?
সবার আগে যে মানব জাতি ,ভুলে গিয়েছে সব?
আসি তবে...
কথা দাও হে পৃথিবী,
হে প্রিয়,  হই আজ পর...তবু এ বুকে তোমার সহস্র স্মৃতির মালা৷  রেখো একটি অনুরোধ মাত্র... করো না আমায় এ আকাশ-সবুজের থেকে একা...
ফিরে আসব আবার আমি কোনও এক নতুন বসন্তের হাওয়া হয়ে...
বন্ধু বিদায়...

6th আগাস্ট..

আগে অনেকবার দেখেছি তাকে৷ কখনো আমার ঘুমের ফাঁকে হঠাৎ হেটে যাওয়া প্রিয়তমার রূপে আবার কখনো আমার হাতে ফুটে ওঠা চিত্র রূপে৷ দেখেছি তাকে সহস্র মানুষের ভীড়ে৷ খুঁজেছি তাকে অনেক পূরনো বইয়ের রাশির মাঝে৷ খুজে ক্লান্ত হয়ে সেদিন বসে ছিলাম কোনও অজানা নিষ্প্রাণ পাথর দলের মাঝে৷ হঠাৎ চোখ পড়ল তার দিকে.আজ সে স্বপ্নে বা চিত্রে নয়,আজ সে ফুটে উঠেছে ঈশ্বরের সৃষ্টিতে৷ কিছুক্ষণ চুপ করে বসে ডাকলাম তাকে৷ না কথা বলা হয়নি তখনো৷ আমি যে শব্দহীন৷ মনটা বার বার চলে যাচ্ছিল তার চোখের কাজলের নীচে৷ আর সজোরে মন বলতে লাগল... এঁকেছ তুমি যাকে গভীর নিদ্রাহীন রাতের নিস্তব্ধতায়, সে যে আজ তোমার সামনে দাড়িয়ে...
আমি জিজ্ঞাসা করলাম তাকে অনেক কিছু.কিছু প্রশ্নের উত্তর পেলাম আর কিছুর না পাওয়া রয়ে গেল৷
তারপর বেশ কিছুবার কথা হয়েছিল... সব ব্যস্ততার মাঝেও সে খুব প্রিয় ছিল৷
কখনো তাকে মুখ ফুটে বলা হয়নি যে সে কতো টা প্রিয় আমার কাছে৷ সে কখনো বুঝতেও বা পারল কই৷ আসলে অনেক কথা ছিল যেগুলো হয়তো বা বলা হয়নি বা বলা যায়নি৷ সে যে কিছু বুঝবে এটাই বা কবে এক্সপেক্ট করলাম?...
তবে আর বুঝে বা বুঝিয়ে কিছু লাভ নেই৷ অনেক ব্যথায় কাতর এ হৃদয় আজ নতুন ব্যথার স্পর্শ পেয়েছে৷ না জানাই থাক তাই ভাল লাগা গুলো৷ কখনো সে যদি খুঁজতে চায় তাকে ঠিকানা দিয়ে দেব সেই চিলেকোঠার ঘরের যেখানে শব্দ আর ভাল লাগাগুলো বন্দি৷ তার আগে থাক না হঠাৎ পথ চলতে চোখে চোখ পড়া হাসিগুলো,কখনো মাঝরাতে অনেক রাগারাগিগুলো৷ 
কে যেন সেদিন বলছিল,"একতর্ফা প্রেম বলে কিছু হয় নাকি আবার...,যতো সব রূপকথার সিঁড়ি গড়ে তোলা"
মাথা নীচু করে সেদিন জবাব দিয়েছিল," রূপকথা ই সই ,তবু তো সে আমার"  ৷৷৷

শূন্যস্থান পূরণ

......দাদু এসো শূন্যস্থান পূরণ খেলি...
"অবসর দুপুরগুলো এরকম ভাবেই কাটছিল৷ আসলে বয়স হয়েছে তাই ছেলে বলেছে এবার কাজ কর্মকে বিদায় জানাতে৷ তার মতে এখন আরামের সময় আমার৷ আরাম বলতে ওই সকালে রোদ ঠেঙ্গিয়ে,ঘামের গন্ধে মিশে বাজার করে আনা আর বাকি দিনটা নাতির দেখাশুনো করা৷ বউমাও আজকাল খুব শশুড় যত্নে মগ্ন৷ সকালে যদি ব্রেকফাস্ট টেবিলে খাবার পৌছতে পাঁচ মিনিট দেরি হয় তাহলেই রাগে স্বর্গত শাশুড়িকে আবার ইহলোকে নামিয়ে আনে পারলে৷ আমি তো তুচ্ছ তার তুলনায়৷  তবে নাতিকে নিয়ে বেশ ছিলাম, সে কখনো ছেলে বউয়ের আদর আপ্পায়ণের পদ্ধতি অবলম্ব করে নি৷ তার সাথে সম্পর্কটা বন্ধুত্বের ছিল৷ তারপর ছেলের বিলেতে চাকরির সুযোগ এলো৷ বললাম তাকে যে বাড়িতে আমি একাই থাকব,তোমরা যাও৷ আসলে ওখানকার লিভিং স্ট্যান্ডার্ডটা খুব হাই তো৷ তাই মানাতে পারব না জেনেই বলেছিলাম এই কথা৷ তারপর আর কি....
ছেলে হয়তো ভাবল যে বাবাকে একা রেখে কী করে যাই৷ তাই বাড়িটা বিক্রি করে আমায় এখানে পাঠিয়ে দিল৷ বাকি সব সম্যবয়সি মস্তিস্কের সাথে যাতে ভাল করে বাঁচতে পারি৷" , বলে বৃদ্ধাশ্রমের বৃদ্ধটি হালকা হাসল৷
হাসিটা আদতে আনন্দের ছিল না সেটি তার মুখের হাবভাবে পরিস্কার ছিল৷
সামনে বসে থাকা মানুষটি কতোটা বুঝল জানি না ,তবে সে বললে, "আচ্ছা আপনি এবার আসুন...."
" রামু পরের জনকে ঘরে পাঠাও..."
বৃদ্ধ লোকটা ঘর থেকে বেড়িয়ে গেল মুখের সেই কৃত্তিম হাসিকে সঙ্গী করে৷
আসলে সে বুঝতে পেড়েছিল যে এখানে তার দুঃখের কথা কেউ শুনতে আসনি৷ আসলে এখানে তো তাদের মতো মানুষদের নিয়ে ডকুমেন্টারি বানাতে এসেছে একদল চলচ্চিত্র জগতের লোক৷ তাদের তো শুধু শোনবার সময় আছে ,বুঝবার নয়৷

মোকেম্বো কান্ড

-পাল্টাছেনা তো মশাই,কিছুই পাল্টাছেনা৷
- পাল্টে আর কি বা হবে? আগে ছিল Casteism এখন হয়েছে Racism.
-উফ! তাই বলে মোকেম্বোতে যা হলো সেটা মেনে নেব চুপচাপ? এর তো বিহিত চাই৷
- মেনে নিতে শিখছো তো বেশ, তাই জন্যই তো তোমার বাড়ির কাজেরলোক মাটিতে বসে খায় আর তুমি টেবিল-চেয়ারে৷
-আমি বলছিলাম কি যে..ইয়ে..মানে বুঝছেন কিনা?
-ঘর জ্বালানি পর ভোলানি না হয়ে এবার একটু মানুষ হতে চেষ্টা করো বাবা....সব পাল্টাবে তাহলে...

ডায়রি...

"মধ্যবিত্ত জীবনের চাওয়া পাওয়া বলতে ভাল চালের ভাত আর মাথার ওপর হাই স্পিড ইলেকট্রিক পাখা৷ সকালবেলাটা কাটে বাজারের ফর্দ বানানোতে আর বাকি দিনটা হিসাব মেলানোতে৷ হাজার হোক খেটে ইনকাম করা পয়সা,হিসাব তো রাখা চাই৷ তবে টিভিটা কিন্তু সব কিছুর সাথে ইনক্লুডেড ৷ আসলে সিরিয়ালের নেশা আছে বউয়ের আর আমার খবরের চ্যানেল গুলোতে ঢু মারার স্বভাব অবসর সময়তে৷ তবে অবসর সময়টা প্রায় খুব কম বললেই চলে৷ নাহ চাকরি-বাকরি করি না আর, তবে বউয়ের সিরিয়ালগুলো যে শেষ হওয়ার নামই নেয় না, তাই আমার অবসর সময়ও আসে না৷ সারাদিন ডায়রি হাতে নিয়ে বাজার-মুদিখানার হিসাব করতে থাকি৷ বেশ ভালই এগচ্ছে জীবন৷ সেদিন বিকেল থেকে মনে সখ জেগেছিল বউকে নিয়ে বাইরে খেতে যাব৷ তাই দেরি না করে আজ রাতের ডিনারের প্ল্যান করলাম৷ ছেলে থাকে বিলেতে,এখানে রয়ে গেছি বলতে শুধু দুই বুড়ো-বুড়ি ই৷ ডিনারের ইচ্ছে টা বুড়ো বয়সের ভীমরতিই বলা যেতে পারে৷ বৃদ্ধ বয়সের ভালবাসাটাও জানো খুব সৌখিন হয়৷ এই তো বেলা শেষ,জানি না আবার কোন জন্মে দেখা হবে৷ তাই হারিয়ে ফেলার আগে বারুক না একটু টান,বাড়ুক একটু ঘনিষ্ঠতা৷ আমায় হারিয়ে নালে সে আমায় খুঁজে পাবেই বা কি করে? পূরনো স্মৃতিগুলো দিয়ে তাকে কাঁদাতে চাইনা তাই নতুন স্মৃতি গড়বার চেষ্টায়...."
ডায়রির পাতাটা উলটে গেল৷
এরপর শুধু শূন্যতা৷ বৃদ্ধার চোখে জল আর মনে আছড়ে পড়ছে অজস্র কালবৈশাখী৷ সেদিন বউয়ের জন্য সারপ্রাইস প্ল্যান করে সে গিয়েছিল ফুলের দোকানে৷ বউয়ের যে ফুলের সখ৷ ফেরার পথে লরির ধাক্কায় মৃত্যু৷
জীবনটা তার সাথে প্রতারণা করলেও তার ভাবনা চিন্তায় কিন্তু এক ফোটাও বেইমানি ছিল না ৷
বাইরের বৃষ্টিটা বেশ বেড়েছে৷ বৃদ্ধা তখন ডায়রিটা বন্ধ করে চোখের জল মুছবে মুছবে করছে, জানলা দরজা বন্ধ করতে হবে যে৷ তখন এক দমকা হাওয়ায় ডায়রিটা আবার খুলে গেল৷ অন্ধকারে তার চোখের সামনে ভেসে উঠল ডায়রির খুলে যাওয়া পাতায় লেখা একটি লাইন,
"আর একশ বছর আমি বাঁচবোই,হোক না এ পথ-ঘাট ফাঁকা"
বৃদ্ধার চোখের জল যেন বাইরের বৃষ্টিকেও হার মানাল৷