গুরুদেব স্মরণে


সাল ১৯১৯,
সেদিন ৫.৩০ টা বাজে, লোকে দলে দলে এসে জুটেছে জালিয়ানওয়ালাবাগে,কিছু মানুষ সেখানে বৈশাখীর ধর্ম উৎসবে যোগ দিতে এসেছে। হঠাৎ পুরো জায়গাটা ঘিরে বুলেটের উলঙ্গ নৃত্য দেখাল ইংরেজ সেপাইরা। কিছু মিনিটে রক্তের রঙে সাজলো জালিয়ান ওয়ালা বাগ। দলে দলে যারা এসেছিলো তারা কারা?
তাদের মাহাত্য ইতিহাসের পাতায় কেবল কিছু শব্দে, তবু তারাই আমাদের ভাবনা-চিন্তা।কেমন ভাবনা চিন্তা?
তারা আমাদের মধ্যে মুক্ত সমাজে বাঁচবার স্বপ্ন জাগিয়েছে। তারা কেউ যে স্বপ্নের ভারত দেখতে পায়নি,সেই ভারতের স্বপ্ন তারা আমাদের দেখাতে শিখিয়েছে।
ছোট থেকে রবি ঠাকুরের লেখা যে খুব বেশী পরেছি কখনও , তা মনে পরে না। বড় হতেই অদ্ভুত টান লক্ষ্য করলাম জীবনানন্দ-সুকান্তর লেখায়। তারপর এগিয়ে এলাম হংরি কবিদের লেখায়। আসলে বিশ্ব কবি আমায় ভাবিয়ে তুলতে পারেনি। তবু মন খারাপে,প্রেম-বিরহে “হঠাৎ দেখা”য় চোখের জল উপচে পড়েনি তা নয়। অদ্ভুত একাকীত্বের বিকেলে পোস্টমাস্টার ফুঁপিয়ে তুলেছে চিরকাল।
রবি ঠাকুর , যদি তোমাকে বলতে পারতাম,
“……তবু আমার কাছে তোমার মাহাত্য এক জায়গাতেই, তোমার লেখায় নয়,তোমার আঁকায় নয়,গানেও নয়। যদি তোমার কিছু আমার কাছে রাখতে দেবে বল,রাখব কেবল Knighthood উপাধি ফিরিয়ে দেওয়ার রাত টা । রাখব শুধু তোমার নিজের উপাধি ঠুকরে দিয়ে স্বপ্ন দেশের কারিগরদের পাশে দাঁড়ানোর মুহূর্ত টা। তোমার জন্ম তিথি আমায় চিরকাল তোমার এই ত্যাগের জন্যই মুগ্ধ করে তুলবে।“
সেদিনের সহস্র প্রানের বলি আর বিপ্লবের বার্তাকে রবি ঠাকুর কখনও হারিয়ে যেতে দেয়নি
“ এ অনন্ত চরাচরে স্বর্গমর্ত ছেয়ে, সব চেয়ে পুরাতন কথা , সব চেয়ে
গভীর ক্রন্দন — ‘ যেতে নাহি দিব ' ।“
-রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর...
জালিয়ান ওয়ালা বাগের কারিগরদের তুমি আজও জীবিত রেখেছ…
তারা জীবিত তোমার লেখনীতে…
শুভ জন্মদিন মহাত্মা…
লহ প্রনাম হে গুরুদেব।।




No comments:

Post a Comment