ছন্নছাড়া....

ইতিহাস হাতড়ে দেখেছি.....
পৃথিবীর চারপাশে সূর্য বা সূর্যের চারিপাশে পৃথিবী ঘোরা নিয়ে কত বেল্লাপনা৷ অবশেষে প্রাণ হারাতে হল কপারনিকাসকে৷ তাতেও জল ঘোলা বন্ধ হলো না৷ শেষমেষ গ্যালিলিও রক্ষা করলো মাথার ঘাম ছুটিয়ে৷
যাক... সে সব থাক,
১৭শ সতাব্দীর মাঝামাঝি তখন, সবে এলিজাবেত সিংহাসনে বসেছেন তখন লাফালাফি শুরু হলো সাহিত্য চর্চার৷ রানীর কাজ কাম বলতে ওই খাজনা আদায়ের হিসেব আর খৃষ্টধর্ম নিয়ে নিলামে বুলি৷
রাজপ্রাসাদ থেকে খানিক দূরে দিনমজুরদের একটি বস্তি ছিল৷  যতই দেশ জুড়ে সাহিতের ঝড় বয়ে যাক না কেন.... ওখানে অনাহার আর রোগ-ভোগই ক্ষমতায় ছিল৷ ফলে ভাষা আর অলংকার জেদ করে বসলো৷
ব্যাস দিয়ে খন্ডযুদ্ধ সুর- তালের, ছন্দ আর ফ্রী ভার্সের৷ গোলমালের শুরুটা অনেকটা এমন ছিল....
রানীর সভায় কবিতাপাঠ না হলে রানী মটামুটি উপোষ করে থাকতেন বললেই চলে৷ সে রকমই একদিন কবিতা পাঠ হচ্ছে ,
" আমার তরোয়াড়ি তোমার বক্ষে লাগে,
আমার জয়, তোমার পরাজয়ের রক্ত দগদগে..."
হঠাৎ ভীর থেকে এক যুবক বলে উঠল....
" স্যার , লাগের সাথে দগদগেটা ঠিক খাপ খাচ্ছে না....
শব্দ না মিলিয়ে একটু ডেপ্ত আনুন স্যার...."
কবি তো রেগে লাল৷ আর রানীর অবস্থাও সুবিধের নয়৷ উপরন্তু বেটা বস্তির ছেলে, তার মুখে এত কথা৷ ফলে তার হাজতবাস আটকানোর ক্ষমতা কারোর ছিল না৷ হাজতবাসের পশ্চাতে সে লিখলো বেশ কিছু কবিতা, তবে সে কবিতা ছন্দহীন৷
তার লেখা কেউ পড়লো না....
অবশেষে তার এই সাহিত্য নিয়ে "ছেলেখেলার" জন্য তাকে প্রাণ দিয়ে বসতে হলো৷
তাকে আজ কারোর মনে নেই...
তবে যেিদন বঙ্গপুত্র জীবনান্দ দাস তার ছন্দ ছাড়া কবিতাগুলির দ্বারা বাংলা সাহিত্যে রেনেসাঁর জন্ম ঘটালে , সেদিন অলক্ষ্যে বসে খুশিতে ফুঁপরে কেঁদেছিল সে যুবক৷
আজ তার বয়স হয়েছে, সে আজ মৃত্য তবু সে ই যে ছিল এ বদলের প্রথম মুখ৷
বব  ডিলনের নবেলপ্রাপ্তি তাকে মুগ্ধ করে তুলেছে,আজ সে আকাশ পথে গলা ফাটিয়ে নিজের কবিতা পাঠ করে,
" অসহ্য তাপ পেরিয়ে পৃথিবীর পথ হেঁটেছি আমি,
জীবন আমার ছন্দ দেয়নি, খুঁজে শুধু তাই তোমারে৷"

No comments:

Post a Comment