আমি রমা...


আমি রমা...
বয়েস ২০ বছর...
নাহ! কোণও স্কুলে পড়ি না।
সদরে আমাদের একটা হোটেল আছে
ওখানেই কাজ করি...

সন্ধ্যাবেলাটা পাশের বন্ধ দোকানের গায়ে হেলান দেওয়া সাইকেলের ওপর বসেই কাটাই...
জানো দেখি কত আমার বয়েসীরা পিঠে ব্যাগ ঝুলিয়ে পড়তে যায়...
আমারও মাঝেমাঝে ইচ্ছে করত আগে ওদের মতো ছুট্টে বেড়িয়ে যাই...
যখন মা ছিল তখন...
তখন মায়ের কাছেই শুনতাম লেখাপড়ার কথা...
তারপর...
তারপর আর হয়ে ওঠেনি...
তবে অবচেতন মনে আজও আকাশ ছুতে ইচ্ছে করে...
পরও ক্ষনেই আবার ফিরে আসি জিবনের সত্যে...
আমি যে গরিব...

জানো আমিও বাকিদের দলে মিশে, রঙিন জীবন বানাতে চাই...
হ্যাঁ চাই...
এখনও চাই...
মাঝে মাঝে নিজের নারি সত্তাটা দরিদ্রতার ওপর বোঝা হয়ে পরে...
সেদিন ঝুমা মাসির ছেলে রতনরে হাতের স্পর্শে শরীরটা কেমন ছ্যাত করে উঠল...
ছোটবেলার বন্ধু ও আমার...
জানো...
আমি বিবাহিত...
তবে বর রাখেনি আমায়...
কেনই বা সে রাখবে আমায় তার বাড়িতে?
বাপের পয়সা কৈ...
বাবা যে আজও তার ঋণ মেটাতে অক্ষম...
মাঝেমাঝে ইচ্ছে করে বিলিয়ে দি নিজের ইচ্ছে এক রাতের প্রশ্রয়ে...
কিন্তু সে যে কেবল একটা রাত...

পুতুল খেলার বয়স হারিয়েছি মাতৃহারা অভাগী রূপে...
আর যৌবন?
যৌবন আজও হারাচ্ছি...
প্রতিমুহূর্তে দারিদ্রতার সাথে লড়ে...



আসলে...
হাত ধরে বাবা ঘুরতে নিয়ে যায়নি কখনও...
ঘুরতে গেছি শুধু শোবার ঘরে আর...
অহরহ যৌন লাঞ্ছনায়...
ছেঁড়া জামার ফাঁকে পুরুষের উষ্ণতায়ে...


আমার এ গল্পের কোণও শেষ নেই...
কোণও প্রাপ্য নেই...
রোজকার ধংশচেতনায় পুড়ে যাচ্ছে এ শরীর...
জীবনের এ মুখ ফিরিয়ে নেওয়া অবাক করে আমায়...
আর বেশীদিন নয়...
আমি জীবনকে প্রতিনিহত ঠেলেছি বাধের খাতায়...

আমি রমা...
বয়েস ২০ বছর...
নাহ! কোণও স্কুলে পড়ি না।
সদরে আমাদের একটা হোটেল আছে
ওখানেই কাজ করি...


সন্ধ্যাবেলাটা পাশের বন্ধ দোকানের গায়ে হেলান দেওয়া সাইকেলের ওপর বসেই কাটাই...

No comments:

Post a Comment